![]() |
গোলাপ গ্রাম (Rose Village) |
যান্ত্রিক শহুরে জীবনে কর্মব্যস্ততায় যখন আমরা হাপিয়ে উঠি তখন একটু বিশ্রামের জন্য বা শারীরিক ক্লান্তি কিংবা মানসিক অবসাদ দূর করতে আমরা ঘুরতে যাই। তবে ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রে খরচ ও সময় বের করাটাই হয়ে ওঠে প্রধানতম চিন্তার বিষয়। ঢাকার আশেপাশে কম সময়ে ও অল্প টাকায় ঘোরার অনেক জায়গা আছে।তারমধ্যে খুব সুন্দর আর মন ভালো করে দেয়ার মতো একটি জায়গা হলো গোলাপ গ্রাম (Golap Gram, Sadullahpur)।
ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্লাপুরে গোলাপ গ্রামে অবস্থিত। তুরাগ তীরবর্তী গোলাপ গ্রামে গেলে আপনার যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি ও ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।
পুরোটা গ্রামটাই যেন গোলাপের বাগান! উঁচু জমিগুলো ছেয়ে আছে মিরান্ডি জাতের গোলাপে। লাল, হলুদ, সাদা—কত বর্ণের যে গোলাপ তার কোনো ইয়ত্তা নেই। যতদূর যাবেন চোখে পড়বে শুধু গোলাপ আর গোলাপ। সকালের শিশির ভেজা গোলাপে নরম আলোর ঝিকিমিকি। গ্রামের বুক চিরে চলে গেছে আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু সরু পথ। তার দু’পাশে বিস্তীর্ণ গোলাপের বাগান।
গোলাপের সৌরভ পুরো গ্রাম জুড়েই।এখানের যেকোনো বাগান থেকে কথা বলে আপনি গোলাপ কিনেতে পারবেন।
সাহদুল্লাহপুর পুরো গ্রামটাই নানা রঙের গোলাপ ফুল দিয়ে ঘেরা। গোলাপ গ্রাম বলা হলেও এখানে গোলাপ ছাড়াও অনেক ফুল চাষ হয়, যেমন- জারভারা, গ্লাডিওলাস। ঢাকার বেশি ভাগ ফুল চাহিদা এখান থেকে মেটানো হয়। শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন ফুলের বাজারগুলোতে গোলাপের প্রধান যোগান দেন এখানকার চাষিরা।স্থানীয় ফুল চাষিরা নিজেদের প্রয়োজনে এ গ্রামেই গড়ে তুলেছেন হাট। শ্যামপুর গ্রামে প্রতি সন্ধ্যায় বসে গোলাপের হাট। সেখানকার আবুল কাশেম মার্কেটের সামনে সন্ধ্যায়ই শুরু হয় ফুল ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য ব্যবসায়ী এসে ভিড় জমান সেখানে। জমতে থাকে
বেচাকেনা। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এ ছাড়া মোস্তাপাড়ায় রয়েছে সাবু মার্কেট। এ মার্কেটেও গোলাপ বেচা কেনা হয়। গোলাপের চাহিদা থাকে সব সময়। তাই চাষিরাও সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন। বিশেষ উৎসবের দিনগুলোতে চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ।
গোলাপ গ্রাম যাওয়ার উপায়ঃ
গোলাপ গ্রাম বা সাদুল্লাহপুর যাওয়ার জন্য কয়েকটা রুট আছে। তবে সব থেকে সহজ রাস্তা বিরুলিয়া ব্রিজ এর রোড। কারণ এই পথে দারুণ সব গোলাপের ক্ষেত। রাস্তার দুপাশ জুড়েই চোখে পড়বে গোলাপের অনেক ক্ষেত।
রুট -১
যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, ফার্মগেট হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধে যাওয়ার বাস সার্ভিস আছে। এ ছাড়া মিরপুর এক নম্বর সেকশন অথবা মিরপুর-১০ কিংবা গাবতলী থেকে রিকশায় সহজেই যাওয়া যায় দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট।
তারপর এখান থেকে শ্যালো ইঞ্জিনের নৌকা ১০ মিনিট পরপর ছেড়ে যায় সাদুল্লাপুরের দিকে। স্পিডবোট, কোষা নৌকা, শ্যালো নৌকা চুক্তিতে ভাড়া নিয়েও যাওয়া যায় সাদুল্লাপুর। সে ক্ষেত্রে শুধু যেতে কোষা নৌকার ভাড়া ৩০০ টাকা, শ্যালো নৌকা ২৫০ টাকা, স্পিডবোট ৫০০ টাকা। হেঁটেই পুরো সাদুল্লাপুর চক্কর দেওয়া যায়।
তারপর এখান থেকে শ্যালো ইঞ্জিনের নৌকা ১০ মিনিট পরপর ছেড়ে যায় সাদুল্লাপুরের দিকে। স্পিডবোট, কোষা নৌকা, শ্যালো নৌকা চুক্তিতে ভাড়া নিয়েও যাওয়া যায় সাদুল্লাপুর। সে ক্ষেত্রে শুধু যেতে কোষা নৌকার ভাড়া ৩০০ টাকা, শ্যালো নৌকা ২৫০ টাকা, স্পিডবোট ৫০০ টাকা। হেঁটেই পুরো সাদুল্লাপুর চক্কর দেওয়া যায়।
রুট -২
টঙ্গি ষ্টেশন থেকে কামারপাড়া হয়ে সি এন জি রিজার্ভ নিয়ে বিরুলিয়া ব্রিজ। ভাড়া ২০০ টাকা। বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে অটোতে ১০ টাকা ভাড়ায় আরকান বাজার, সেখান থেকে অটোতে ১০ টাকায় সাদুল্লাহপুর বা সরাসরি ২০ টাকায় বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে সাদুল্লাহপুর।
রুট -৩
উত্তরা হাউজ বিল্ডিং, নর্থ টাওয়ার বা মাসকট প্লাজা থেকে সোনারগাঁ জনপথ ধরে লেগুনাতে দিয়াবাড়ি, তারপর একটু হেটে মেইনরোড, লোকাল গাড়িতে উঠে বিরুলিয়া ব্রিজ। হেঁটেও যেতে পারবেন। বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে অটোতে ১০ টাকা ভাড়ায় আরকান বাজার, সেখান থেকে অটোতে ১০ টাকায় সাদুল্লাহপুর বা সরাসরি ২০ টাকায় বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে সাদুল্লাহপুর।
এখান থেকে নৌকা রিজার্ভ নিয়ে সরাসরি সাদুল্লাহপুর। রিজার্ভ ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকার মত। ২৫ জনের মত বসা যায়।
নৌকা চলাচল ৬ টার পরে বন্ধ হয়ে যায়।
কোথায় খাবেনঃ
সাদুল্লাপুর ঘাটের কাছে হোটেল আছে। সাহদুল্লাপুর ঘাটে পৌঁছানোর পর ঘাটের বট গাছের নিচে বসে চা-নাস্তা করে নিতে পারেন। দল বেঁধে গেলে হোটেলের লোকদের আগেই রান্না করার কথা বলতে হবে।এছাড়া আকরান বাজারে কিছু স্থানীয় হোটেল আছে সেখানেও খাবারের সু-ব্যবস্থা আছে।
No comments:
Post a Comment